লেখাপড়া করা অবস্থায়ও পার্টটাইম জব করা যায়। অধ্যায়নরত অবস্থাতেই ছেলেমেয়েরা এই ধরনের জব করে থাকে। আমাদের দেশে এর প্রচলন তেমন না হলেও কিছু কিছু সেক্টরে পার্টটাইম জবের বেশ কদর রয়েছে। কয়েকটি খাতের কথা এখানে তুলে ধরা হলো—

ফ্রিল্যান্সিং

এ সময়ের তারণ্যের একটি জনপ্রিয় পছন্দ হলো পার্টটাইম জব। সঠিক হিসেব না থাকলেও দেশের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার তরুণ-তরুণী এই পেশার সাথে জড়িত থেকে অনেক অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে। অনেকেই ধারণা করছেন প্রত্যেকে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার মার্কিন ডলার আয় করছেন ঘরে বসেই। ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে রয়েছে সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়ন, ওয়েবসাইট তৈরি ও ডিজাইন, মোবাইল অ্যাপস, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্ম, ভিওআইপি অ্যাপ্লিকেশন, ডেটা অ্যান্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রি-প্রেস, ডিজিটাল ডিজাইন, সাপোর্ট সেবা, কাস্টমাইজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি এর সাথে আরও যুক্ত হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও সোশ্যাল মার্কেটিংয়ের কাজও।

সুপারশপ

সুপার শপগুলোতে গ্রাহক সেবার জন্য অল্পবয়সী তরুণ-তরুণীকে। এদের মধ্যে অনেকেই থাকেন পার্টটাই জব নিয়ে। সুপার শপগুলোতে দুই ধরনের কাজ হয়ে থাকে । এক. শপকে গুছিয়ে রাখা ও পণ্য বহন করা। দুই. গ্রাহক সেবা প্রদান করা আর তা হলো সুপারশপে থাকা পণ্যগুলো সম্পর্কে গ্রাহক বা ক্রেতাকে বোঝানো। আমাদের দেশে এই মুহূর্তে প্রায় ৩০টির মতো চেইনশপ রয়েছে। সারা দেশে এই চেইনশপগুলোর ২৫০টির বেশি আউটলেট রয়েছে আর এতে কাজ করছে প্রায় ১৫ হাজার কর্মী। এরা প্রায় সবাই পার্টটাইম জব করেন তবে এসব স্টোরে ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা কাজ করার সময় নির্ধারিত থাকে।

কল সেন্টার

দেশের মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোসহ বিদেশি আউটসোর্সিংনির্ভর ফর্মগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য কল সেন্টারের মাধ্যমে বেশকিছু পার্ট টাইম জবের চাকরির সুযোগ করে দিয়েছে। কল সেন্টারে শিক্ষার্থীরাই বেশি কাজ করছেন। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছেন স্মার্ট ব্যক্তিত্ব, ইংরেজি জানা, প্রমিত উচ্চারণ, ভালো কণ্ঠ ও যোগাযোগে দক্ষ শিক্ষার্থীরা।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট

বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের প্রমোশন, ক্যাম্পেইন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট-এর সহায়তা নিয়ে থাকে। তাদের সহায়তা করার জন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো স্মার্ট তরুণ তরুণীদের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। এই কাজের ধরণ হচ্ছে—দিন, সপ্তাহ কিংবা মাসব্যপী হয় এই অনুষ্ঠানগুলো। এজন্যই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদেরকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপনী সংস্থা

যথার্থই মার্ক টোয়েন বলেছিলেন, বহু ছোট জিনিস বড় করে তোলা যায় শুধু বিজ্ঞাপনের দ্বারা। বর্তমানে বিজ্ঞাণ নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ ভালোই সময় কাটাচ্ছেন। আমাদের দেশে বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থার সংখ্যাও অনেক। যারা এখনো এই কাজের সাথে যুক্ত হননি তারা পার্ট টাইম জব নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিতে পারেন।

বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো স্মার্ট, পজিটিভ ও সৃষ্টিশীল তরুণ-তরুণীদের পছন্দ করে। বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ গড়া সম্ভব। পড়ালেখার পাশাপাশি সৃজনশীল যেকোনো শিক্ষার্থী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করতে পারেন।

ফ্যাশন হাউস

ক্রেতাকে সহায়তা, সঠিক পণ্যটি বাছাই ও কিনতে ফ্যাশন হাউসগুলোয় বিক্রয় সহযোগী থাকে। তাদের ৮০ শতাংশই ছাত্র-ছাত্রী। শুধু নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আর ভাষার দক্ষতা থাকলেই ওই সেক্টরে পার্ট টাইম জব করা যায়। ফ্যাশন হাউসগুলোই প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে নেবে।

– মিজানুর রহমান

Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *