বর্তমান সময়ে জমি কিনে বাড়ি করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। আপনি চাহিদামতো জমি কিনতে চাচ্ছেন, কিন্তু পাচ্ছেন না। অনেকেই নিজের পছন্দমতো একটি ফ্ল্যাট বা প্লট কিনতে চান। আপনার এই স্বপ্নকে সত্যি করতে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করে সেগুলোর বিজ্ঞাপন নিয়ে হাজির হচ্ছেন। তাই অনেকেই জমি কিনে বাড়ি করার ঝামেলায় না গিয়ে আবাসন প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট বা প্লট কিনছেন।

আবাসন প্রতিষ্ঠান বা প্রপার্টি কোম্পানিগুলোকে জমি দেওয়া বা প্লট-ফ্ল্যাট কেনার আগে বেশ কিছু দেখে ও যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই অনেকেই তাঁর একান্ত প্রয়োজনীয় ফ্লাটটি কেনার আগে হচ্ছেন চরম বিড়ম্বনার শিকার । পাশাপাশি আস্থা ও বিশ্বাসের অভাবে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।

নিজের জন্য একটি ফ্লাট ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন।অনেক কোম্পানীর কথা আর বাস্তবে কাজে সাথে অনেক ফারাক থাকায় আর ক্ষেত্র বিশেষে প্রতারনায় শিকার হয়। এ পরিস্থিতি এড়াতে হলে ফ্লাট ক্রেতারও কিছু রয়েছে দায়িত্ব । খুব সচেতনভাবেই সিদ্বান্ত নিতে হবে ফ্লাট ক্রেতাকে । ফ্লাট ক্রয়ের সময় সিদ্বান্ত নিতে ভূল করলে তা শুধরানো অনেক দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ফ্লাট কেনার আগে যে বিষয়গুলো জেনে নেয়া প্রয়োজন :

 আপনি যে প্রজেক্টে ফ্লাট ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন, প্রথমে সে প্রজেক্টের রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত নকশার ফটোকপি নেবেন এবং সম্বভ হলে একটা অনুমোদিত প্লানের ফটোকপি সংগ্রহে রাখুন।  ওই নকশা আসলেই রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত কিনা তা নিশ্চিত হোন । রাজউক অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মানের প্রবনতা বর্তমানে অনেকটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি।বিভিন্ন কোম্পানী বিভিন্নভাবে কম বেশি রাজউক অনুমোদনের বাহিরে ভবন নির্মানের কাজ করে থাকে যা আপনার জানা থাকলে সিদ্ধান্ত গ্রহনে সুবিধা হবে । এ ক্ষেত্রে মূলত নিম্নলিখিত তিনটি বিষয়ের প্রতি নজর দেয়া দরকার।

 ভবনের যে ড্রয়িংটা রাজউক অনুমোদিত ড্রয়িং হিসাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা হতে পারে ভুয়া বা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তৈরী করা। এক্ষেত্রে ড্রয়িংটা সঠিক কিনা তা রাজউক অফিস হতে নিশ্চিত হয়ে নেয়া। রাজউকের ওয়েভ সাইট (www.rajukdhaka.gov.bd) হতেও সহায়তা নেয়া যেতে পারে। প্রকৃত অর্থে কোন প্রজেক্টের জন্য রাজউক হয়তো অনুমোদন দিয়েছে ৭ তলা ভবন, কিন্তু বাস্তবে ভবন নির্মিত হয়েছে ৮ তলা । সুতরাং ৮ম তলায় নির্মিত ফ্লাট হবে অবৈধ। এধরনের কোন ফ্লাট আপনি কিনছেন কিনা তা অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে। যাচাই বাছাই ব্যাতীত ফ্লাট কিনে অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন।

রাজউক অনুমোদন অনুযায়ী প্রতিটা ফ্লাট কত বর্গফুট হওয়া উচিত তার হিসাব খুব কম ক্রেতাই বুঝে নেন। ধরুন, রাজউক অনুমোদন মোতাবেক একটি ফ্লোরের নেট এরিয়া ১২০০ বর্গফুট এবং প্রতিটা ফ্লোরে করা হয়েছে ২টি ইউনিট । অর্থাৎ প্রতিটা ইউনিট হবে ৬০০ বর্গফুট । নীচতলায় ও ছাদের উপরে নিয়ম অনুযায়ী কমন এরিয়া যোগ করলে ফ্লাটের এরিয়া হবে কম-বেশি ৭০০ বর্গফুট । অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, রাজউকের নিয়ম অমান্য করে এ ধরনের ফ্লাটকে ১১০০-১২০০ বর্গফুটে উন্নীত করা হয়। অর্থাৎ রাজউকের অনুমোদিত এরিয়ার চেয়ে বিক্রয়যোগ্য এরিয়া হিসাব করলে  প্রায় শতভাগ বৃদ্ধি ! এ ধরনের ফ্লাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান হতে হবে।

ভবনের স্থায়িত্ব ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ভবনের স্ট্রাকচারাল ডিজাইন বা কাঠামোগত নকশা। স্ট্রাকচারাল ডিজাইনে মারাত্বক ত্রুটি থাকাটা সাভারের রানা প্লাজা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারন বলে মনে করা হয়। ফাউন্ডেশন , পিলার এবং বীম এ কয়টি কাটামোগত উপাদানে কোন ভাবেই দুর্বলতা থাকলে চলবেনা। এ জন্য অভিজ্ঞ এবং পেশাদার প্রকৌশলীর মাধ্যমে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করানো হয়েছে কিনা তা খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হতে হবে।  ভবনের ষ্ট্যাকচারাল ডিজাইন সম্পন্নকারী প্রকৌশলীর নাম ও তার পেশাগত রেজিষ্ট্রেশন নম্বর জেনে নিতে পারেন ।

ভবনের বাহ্যিক আকৃতি ও সৌন্দর্য এবং ভিতরে জায়গার ব্যবহার উপযোগীতা হচ্ছে স্থাপত্য নকশার মুল প্রতিপাদ্য বিষয়। একজন স্থপতির দ্বারা এ কাজটি করা হয়ে থাকে। ভবনের প্রবেশ, চলাচল, আলো বাতাসের ব্যবস্থা, উপরে নীচে উঠা নামা, সর্ম্পূণ জায়গার লে-আউট, ভিতরের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো কেমন হবে তার সম্পূর্ন নকশা করা হয়। ভবনের সার্বিক বসবাসের পরিবেশ, অগ্নি নিরাপত্তা ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হলে স্থাপত্য নকশা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্থপতি এবং প্রকৌশলীর সমন্বিত ডিজাইন না হলে ভবনে মারাত্বক ত্রুটি থেকে যেতে পারে। অনেক ক্রেতা এ বিষয়গুলোর দিকে তেমন নজর না দিয়ে, ফ্লাট কত কম মূল্যে কেনা যায় সে দিকেই বেশি মনোযোগ দেন। ফলে, কমমূল্যে ফ্লাট ক্রয় করা সম্ভব হলেও অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি ফ্লাটে রয়ে যায় যা আরামদায়ক বসবাসের জন্য বেশ অনুপোযোগী। ফ্লাটক্রয়ের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। ভবনের স্থাপত্য নকশা প্রনয়নকারী স্থপতির নাম ও তার পেশাগত রেজিষ্ট্রশন নম্বর জেনে নিতে পারেন।

 জমির প্রকৃত পরিমান, মূল ফ্লাট এরিয়া এবং কমন এরিয়ার পরিমাপ জেনে নেবেন । কমন এরিয়া আসলে কতটুকু তা খুব কম প্রতিষ্ঠানই পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে অনেকেই বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ধরুন, ৪৫০০ টাকা বর্গফুট দামে আপনি ফ্লাট ক্রয় করলেন। আপনার ফ্লাট এরিয়ার মধ্যে যদি মাত্র ২৫ বর্গফুট বেশি ধরা থাকে তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে হবে ১,১২,৫০০/- টাকা ! অথচ মাত্র ২৫ বর্গফুট বেশি আছে কি নাই, তা কিন্তু আপনি স্বাভাবিকভাবে বুঝতে পারবেন না ।  আসলে এ ধরনের বিষয়ের সাথে কোম্পানী কর্তৃপক্ষের সততা সরাসরি জড়িত। যাহোক, যত বর্গফৃট ফ্লাট এরিয়ার মূল্য আপনি পরিশোধ করবেন তার বিস্তারিত হিসাব (Break up) অবশ্যই লিখিতভাবে বুঝে নিবেন। বাউন্ডারী দেয়াল থেকে মূল ভবন পর্যন্ত আলো বাতাসের জন্য বাস্তবে কতটুকু জায়গা ছাড় দেয়া আছে তা জেনে নিন।

প্লট বা জমির সব কাগজ পত্রের একসেট ফটোকপি সংগ্রহ করুন এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ একজনকে দিয়ে পরীক্ষা করে নিন। জমির কাগজ পত্রের সাথে পাওয়ার অব এ্যাটর্নীর একটা কপি নিন ।  এসব কাগজ পত্র সঠিকভাবে না থাকলে আপনি ব্যাংক বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে লোন গ্রহন করতে পারবেন না । এমনকি ফ্লাট রেজিষ্ট্রেশন করার সময়ও ঝামেলা হতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে ফ্লাট রেজিষ্ট্রেশন না হতেও পারে। সুতরাং এ বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

যে কোম্পানী হতে ফ্লাট কিনবেন তারা ইতিপূর্বে কোন প্রজেক্ট শেষ করেছে কিনা তার খোঁজ নিন। জেনে নিন ইতিপূর্বে তারা কি সময়মত প্রজেক্ট হ্যান্ডওভার করেছে ? যদি কোন প্রজেক্ট শেষ করে থাকে তাহলে প্রজেক্টের কাজের গুনগত মান কেমন তা জানার জন্য বাস্তবে সেই প্রজেক্ট ভিজিট করুন । প্রয়োজনে এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ কারো সহায়তা নিন।  প্রজেক্টের কাজের মান পছন্দ হলে তবেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিন।

আপনি যে প্রজেক্টে ফ্লাট ক্রয় করবেন তা কি সময় মত হ্যান্ডওভার করতে পারবে বলে আপনি নিশ্চিত হতে পেরেছেন ? প্রজেক্টটি কি আদৌ শেষ করতে পারবে বলে আপনার মনে হয় ? ইতিবাচক জবাব যদি পান তবেই অগ্রসর হোন । যদিও এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া বেশ কঠিন, তবে যতটুকু সম্ভব খোঁজ নেবার চেষ্টা করুন। যে কোম্পানী হতে ফ্লাট কিনবেন তারা REHAB মেম্বার  কিনা জেনে নিন এবং মেম্বারশীপ নম্বর (www.rehab-bd.org) কত তাও জেনে নিতে পারেন।  যদি রিহ্যাব মেম্বার হয় তবে কোন সমস্যার উদ্ভব হলে তার সমাধানে মধ্যস্থততা করার সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে।

যে প্রজেক্ট থেকে  ফ্লাট ক্রয়ের চিন্তা করছেন, তার নির্মান কাজ যদি চালু থাকে তাহলে  প্রজেক্টটিতে মৌলিক মালামাল যেমন – রড, সিমেন্ট, পাথর, বালু, ইট ইত্যাদির গুনগতমান সম্পর্কে ভালো করে খবর নিন । প্রয়োজনে বাস্তবে তাদের প্রজেক্টগুলো ভিজিট করুন। মৌলিক মালামালের পাশাপাশি ফিনিশিং মালামালের গুনগতমান সম্পর্কে ভালো করে খবর নিন। মালামাল যতই ভালো হোক, যদি সুপারভিশন দক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা করা না হয় তাহলে কাজ কখনই ভালো মানের হবে না। সুতরাং প্রজেক্টের কাজ দৈনিক নিয়মিত কে বা কারা সুপারভিশন করে সে ব্যাপারটিও জানতে হবে।

অনেক প্রজেক্ট দেখা যায় কাজ শুরু করেও শেষ হচ্ছে না বা কাজ খুব ধীর গতিতে চলছে । এমন প্রজেক্টের ফ্লাট ক্রয় করলে সময়মত ফ্লাট হস্তান্তর হবে কি না তা বলা বেশ মুশকিল। অর্থাৎ প্রজেক্টের কাজ কবে শুর হয়েছে এবং তার বর্তমান স্ট্যাটাস সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ  কি না তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোম্পানী পরিচালনায় যাঁরা যুক্ত আছেন তারা কি সংশ্লিষ্ট কাজে প্রফেশনাল ? তাদের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, আন্তরিকতা ও সততা খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয়, যা আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে ।কোম্পানী ব্যবস্থাপকরা যদি সংশ্লিষ্ট কাজে অপেশাদার হয় তাহলে তাদের সাথে চুক্তি করার পূর্বে অবশ্যই ভাবা দরকার।

ডেভেলপারের দায়-দায়িত্বঃ সকল নিবন্ধিত ডেভেলপারকে তাদের প্রস্তুতকৃত প্রসপেক্টাসে রিয়েল এস্টেট এর নিবন্ধন নম্বরসহ তার নাম, ঠিকানা ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমােদিত নকশার অনুমােদন নম্বরসহ স্মারক নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করতে হবে। কোন ডেভেলপার কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প অনুমােদন এবং ডেভেলপার কর্তৃক হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের ক্ষমতা বা অধিকার প্রাপ্তির পূর্বে রিয়েল এস্টেট ক্রয়বিক্রয়ের জন্য প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে প্রচার করতে পারবে না। প্রকল্প অনুমােদনের পূর্বে ক্রেতার নিকট ডেভেলপার কোন রিয়েল এস্টেট বিক্রয় করতে বা বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না।

প্রত্যেক ডেভেলপার ক্রেতাকে কর্তৃপক্ষের অনুমােদন ও সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা সংক্রান্ত দলিলপত্র প্রদর্শন করবে। অনুমােদিত নকশা ব্যতীত অন্যান্য সহযােগী স্থাপত্য নকশা, কাঠামােগত নকশাসহ অন্যান্য বিল্ডিং সার্ভিসেস ডিজাইন ও দলিলাদি ডেভেলপার কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হতে হবে। বেসরকারী বা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে আবাসিক প্লট প্রকল্পের আওতাধীন জমির মালিকানা স্বত্ব ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা,২০০৪ অনুযায়ী প্রয়ােজনীয় সংশােধন সাপেক্ষে অনুসরণ করতে হবে। প্রত্যেক ডেভেলপারকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা,২০০৪ প্রয়ােজনীয় সংশােধন সাপেক্ষে এবং প্রযােজ্য ইমারত নির্মাণ সংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট এর নকশার অনুমােদন, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প উন্নয়ন, সংশােধন, পুনঃঅনুমােদন বা নবায়ন করতে হবে।

বেসরকারী বা সরকারী নির্মিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান নির্ধারিত পদ্ধতিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমােদিত হতে হবে। রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নবিধিমালা, ২০০৪ অনুযায়ী নাগরিক সুবিধাদি যতদূর সম্ভব নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি-বিধান অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট উন্নয়নপ্রকল্প এমনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট যে কোন প্রকারের অবকাঠামাে বা প্লট বা ফ্ল্যাট বা রাস্তাঘাট, বৈদ্যুতিক সংযােগ, পানি সরবরাহ, পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশন, গ্যাস সরবরাহ এবং টেলিফোন সংযােগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধার কোনরূপ ক্ষতি সাধন না হয়।

ভূমির মালিক কর্তৃক রিয়েল এস্টেট নির্মাণঃ কোন ডেভেলপার জমি ক্রয় করে ওই জমিতে মালিক হয়ে উক্ত জমির উপর বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করলে এই আইনের সকল বিধি-বিধান তার ক্ষেত্রেও প্রযােজ্য হবে। কোন ব্যক্তি এককভাবে বা কয়েকজন ব্যক্তি যৌথভাবে কোন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান না হয়েও তার বা তাদের নিজস্ব ভূমির উপর ক্রয়বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করলে, তার বা তাদের ক্ষেত্রেও, যতদূর প্রযােজ্য হয়, এই আইনের বিধানাবলী প্রযােজ্য হবে।

রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তাবলীঃ প্রসপেক্টাসে বা বরাদ্দপত্রে রিয়েল এস্টেট এর বিক্রয়যােগ্য এলাকার বিভাজনসহ যথাযথ ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ উল্লেখ করতে হবে। রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিস্তারিত শর্ত, পক্ষদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে উল্লেখ করতে হবে। কোন ডেভেলপার ক্রেতার সম্মতিক্রমে বরাদ্দকৃত নির্দিষ্ট প্লট বা ফ্ল্যাট পরিবর্তন করতে পারবে। কোন ডেভেলপার ক্রেতার নিকট হতে চুক্তিতে উল্লিখিত শর্তের বাহিরে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করতে পারবে না। তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোন পক্ষ পরবর্তীতে কোন উন্নতমানের সরঞ্জামাদি সংযােজনের প্রস্তাব করে পরস্পর সম্মত হয়ে এই মর্মে কোন সম্পূরক চুক্তি সম্পাদন করলে এই বিধান কার্যকর হবে না।

হস্তান্তর দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশনঃ (১) রিয়েল এস্টেটের সমুদয় মূল্য পরিশােধের পর ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাসের মধ্যে ক্রেতাকে রিয়েল এস্টেটের দখল হস্তান্তর, দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে দিবে। (২) রিয়েল এস্টেট এর দখল হস্তান্তরকালে এর আয়তন কম বা বেশি হলে তার মূল্য ক্রয়কৃত দর অনুযায়ী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। (৩) কোন ডেভেলপার কোন ভূমির মালিকের নিকট হতে বা পক্ষে আম-মােক্তারনামা দলিলবলে ভূমি প্রাপ্ত হয়ে ঐ ভূমিতে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ এবং সেই অংশে প্রাপ্ত রিয়েল এস্টেট ক্রেতাগণের নিকট বিক্রয়ের প্রস্তাব করলে ভূমির মালিক বা তার পক্ষে আম-মােক্তারনামা দলিলে,

উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, এই মর্মে ডেভেলপারকে ক্ষমতা অর্পণ করতে হবে যাতে ডেভেলপার তার অংশে প্রাপ্ত রিয়েল এস্টেট বাবদ দলিল স্বয়ং সম্পাদন করে বিক্রয় বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করতে পারে। (৪) উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত মতে ভূমির মালিক বা তার পক্ষে ডেভেলপারকে আম-মােক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করে রিয়েল এস্টেট বিক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষমতা অর্পণ করা না হলে, নির্মিত রিয়েল এস্টেট বিক্রয় বা হস্তান্তরযােগ্য হবার পর ডেভেলপার কর্তৃক লিখিতভাবে অনুরুদ্ধ হবার ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে ভূমির মালিক বা তার পক্ষে ক্রেতার অনুকূলে দলিল সম্পাদন করে দিতে হবে। (৫) প্রচলিত অন্য কোন আইনে ভিন্ন কিছু যাই থাকুক না কেন,

ডেভেলপার কর্তৃক উপ-ধারা (৪) এর অধীন অনুরুদ্ধ হয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিক বা তার পক্ষে দলিল সম্পাদন করা না হলে, ডেভেলপার স্বয়ং এই ধারার ক্ষমতাবলে সেই অংশ এমনভাবে ক্রেতার বরাবরে দলিল সম্পাদন করে দিতে পারবে যেন ডেভেলপার নিজেই ঐ ভূমি ও রিয়েল এস্টেটের মালিক। ভূমি মালিক ও ডেভেলপারের মধ্যে চুক্তিঃ (১) ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়নের লক্ষ্যে ডেভেলপারের সাথে লিখিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করবেন। (২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তিতে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বাবদ ডেভেলপারের প্রাপ্ত অংশের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক প্রাপ্ত অংশ ডেভেলপারের মনােনীত ক্রেতা বরাবর দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার ক্ষমতা প্রদানের লক্ষ্যে ডেভেলপার বরাবর আম-মােক্তারনামা দলিল সম্পাদনের শর্ত উল্লেখসহ ভূমি উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করবার সময় উল্লেখ থাকবে। (৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করতে হবে।

রিয়েল এস্টেট এর সুবিধাদিঃ রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ অনুযায়ী নাগরিক সুবিধাদি, যতদূর সম্ভব নিশ্চিত করতে হবে। ডেভেলপার কতৃর্ক নির্মিত সকল প্রকার রিয়েল এস্টেট আলাে-বাতাস চলাচলের উপযােগী হতে হবে; হস্তান্তরের পূর্বে তাতে সকল প্রকার ইউটিলিটি সার্ভিস যেমন পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পয়ঃনিস্কাশন, বর্জব্যবস্থাপনা, অগ্নি নিরােধক ব্যবস্থা ইত্যাদি (প্রযােজ্য ক্ষেত্রে) সংযােগ থাকতে হবে; এবং হস্তান্তরের পর নির্মাণ সংক্রান্ত ত্রুটির কারণে মেরামতের প্রয়ােজন হলে হস্তান্তরের তারিখ হতে অন্যূন ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত ডেভেলপারের নিজ খরচে ঐ মেরামত কাজ সম্পন্ন করতে হবে। পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রত্যেক ডেভেলপারকে রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের পর অন্যূন ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত এর রক্ষণাবেক্ষণের করতে হবে। রিয়েল এস্টেট এর অনুমােদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে তাতে কোন সুযােগ-সুবিধা হ্রাস বা কমন স্পেস এর পরিবর্তন করা যাবে না। প্রত্যেক ডেভেলপারকে ক্রেতার অনুকূলে রিয়েল এস্টেট বরাদ্দের সময় প্রকল্পের স্থাপত্য নকশায় এবং লে-আউটে চিহ্নিত নাগরিক সুযােগ-সুবিধাদি সম্পর্কিত তথ্য সম্বলিত বিবরণী প্রদান করতে হবে।

রিয়েল এস্টেট এর মূল্য পরিশােধের নিয়মাবলীঃ প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে উল্লিখিত নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতা রিয়েল এস্টেট এর মূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশােধ করবে। অবকাঠামােগত উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি সরবরাহপূর্বক বিক্রয় বা বরাদ্দকৃত রিয়েল এস্টেটসমূহ দখল হস্তান্তরের উপযােগী না হওয়া পর্যন্ত কিস্তির অর্থ ব্যতীত কোন সুদ নেওয়া যাবে না।রিয়েল এস্টেট এর সেবাসমূহ নিশ্চিতকরণঃ (১) প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে বর্ণিত সেবাসমূহ যেমন: পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি (প্রযােজ্য ক্ষেত্রে) সংযােগ প্রদানের ক্ষেত্রে ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের পূর্বেই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে। (২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণ সত্ত্বেও, সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহের সীমাবদ্ধতার কারণে যথাসময়ে সংযােগ প্রদান করা সম্ভব না হলে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহে সেবা প্রাপ্তির দরখাস্ত দাখিলপূর্বক উদ্যোগ অব্যাহত রাখলে ডেভেলপারকে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা যাবে না।

ক্রেতা কর্তৃক এককালীন মূল্য বা কিস্তি পরিশােধে ব্যর্থতাঃ (১) ক্রেতা কতৃর্ক স্থিরীকৃত সময়ের মধ্যে রিয়েল এস্টেট এর এককালীন মূল্য বা কিস্তির মূল্য পরিশােধে ব্যর্থতার ফলাফল সম্পর্কে প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে বিশদ উল্লেখ থাকতে হবে। (২) চুক্তিতে বা বরাদ্দপত্রে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কারণে রিয়েল এস্টেট ক্রেতা এককালীন মূল্য বা কিস্তির অর্থ পরিশােধে ব্যর্থ হলে ক্রেতাকে, রেজিস্টার্ড ডাকযােগে, অন্যূন ৬০(ষাট) দিনের পূর্ব নােটিশ প্রদান ব্যতীত তার রিয়েল এস্টেট এর বরাদ্দ বাতিল করা যাবে না। (৩) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত বরাদ্দ বাতিলের ক্ষেত্রে ক্রেতার জমাকৃত অর্থ বরাদ্দ বাতিল আদেশের পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে প্রাপকের হিসাবে প্রদেয় চেকের মাধ্যমে একত্রে ফেরত প্রদান করতে হবে। (৪) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোন ক্রেতা বিলম্বে কিস্তির অর্থ পরিশােধ করতে চাইলে, দেয় কিস্তির উপর বিলম্বিত সময়ের জন্য কিস্তির অর্থের উপর ১০% হারে সুদ প্রদান সহকারে কিস্তি পরিশােধ করতে পারবে। (৫) উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী ক্রেতা সর্বসাকুল্যে ৩ (তিন) বার কিস্তির অর্থ পরিশােধে বিলম্ব করলে ডেভেলপার সংশ্লিষ্ট ক্রেতার বরাদ্দ বাতিল করতে পারবে।

ডেভেলপার কর্তৃক রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরে ব্যর্থতাঃ ১) চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরে ব্যর্থ হলে রিয়েল এস্টেট এর মূল্য বাবদ পরিশােধিত সমুদয় অর্থ চুক্তিতে নির্ধারিত পরিমাণ ক্ষতিপূরণসহ ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়(account navee)চেকের মাধ্যমে ফেরৎ প্রদান করবে। তবে শর্ত থাকে যে ক্রেতা ও ডেভেলপার যৌথ সমাতিতে বিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের সময়সীমা সম্পূরক চুক্তির মাধ্যমে বর্ধিত করলে উপ-ধারা(২) এর বিধান অনুযায়ী ক্রেতাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। (২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বা হার পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে উল্লেখ না থাকলে পরিশােধিত সমুদয় অর্থের উপর ১৫% হারে ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হবে এবং ডেভেলপার অনধিক ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) কিস্তিতে ক্ষতিপূরনের অর্থসহ সমুদয় অর্থ পরিশােধ করবে। (৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত ক্ষতিপূরণের সময় গণনার ক্ষেত্রে সমুদয় অর্থ পরিশােধের তারিখ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ সময় গণনা করতে হবে।

রিয়েল এস্টেট বন্ধক ইত্যাদিঃ ডেভেলপার কর্তৃক বন্ধককৃত কোন রিয়েল এস্টেট ক্রেতা বরাবর বিক্রয় করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে, ক্রেতার সম্মতিতে বরাদ্দকৃত কোন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কর্তৃক কোন ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বন্ধক রাখা যাবে। ডেভেলপার কর্তৃক নির্মাণাধীন বা নির্মিত রিয়েল এস্টেট সম্পূর্ণভাবে বা এর অংশবিশেষ কোন ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট ভূমি মালিকের সম্মতিক্রমে ডেভেলপার কর্তৃক বন্ধক রাখা যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের পূর্বেই ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট রিয়েল এস্টেট বন্ধক হতে দায়মুক্ত করতে হবে।

ক্রেতা কর্তৃক অর্থ ফেরত গ্রহণের নিয়মাবলীঃ কোন কারণে ক্রেতা লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তাঁর অনুকূলে প্রদত্ত বরাদ্দ বাতিলপূর্বক পরিশােধিত অর্থ ফেরত গ্রহণ করতে চাইলে, ডেভেলপার আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ পরিশােধিত অর্থের ১০% অর্থ কর্তনপূর্বক অবশিষ্ট অর্থ ক্রেতাকে ৩ (তিন) মাসের মধ্যে এককালীন চেক বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করবে।

স্থাপত্য নকশা বা দখল হস্তান্তর পত্র প্রদানঃ (১) এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেস ক্রয় বা বিক্রয়ের চুক্তিপত্র বা বরাদ্দপত্রে প্রস্তাবিত ভবনে যে সকল ফিটিংস, ফিক্সার, ইত্যাদি ব্যবহার করা হবে তার বিবরণী সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে। (২) স্থাপত্য ও কাঠামাে নকশা প্রণয়ন করবার সময় Building Construction Act, 1952(Act No. II of 1953) এ বর্ণিত যােগ্যতাসম্পন্ন স্থপতি, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট কারিগরী ব্যক্তিবর্গের দ্বারা নকশা প্রণয়ন ও তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। (৩) স্থাপত্য ও কাঠামাে নকশা প্রণয়নে প্রযােজ্য ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত ভিন্ন কোন কারিগরী বিষয়ের জন্য ডেভেলপার প্রকৌশলী বা স্থপতি এর যৌথ ব্যবস্থাধীনে আন্তর্জাতিক মানের কোড অনুসরণ করা যাবে। (৫) যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমােদন ব্যতীত অনুমােদিত নকশার কোনরূপ পরিবর্তন করা যাবে না। যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমােদিত এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেস এর স্থাপত্য নকশা এবং অনুমােদিত কারিগরী ব্যক্তি কর্তৃক প্রণীত কাঠামাে নকশা ও বিল্ডিং সার্ভিসেস (ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, প্লাম্বিং, ইত্যাদি) এর নকশার কপি এবং দখল হস্তান্তর পত্র বা ডেভেলপার কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষর করে ক্রেতাকে প্রদান করতে হবে।

অপরাধ, বিচার ও দন্ডঃ কোন ব্যক্তি নিবন্ধন গ্রহণ না করে কোন রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করলে তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। #কোন ডেভেলপার যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমােদন গ্রহণ ব্যতীত কোন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করলে কিংবা অননুমােদিত রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের বিজ্ঞাপন প্রচার বা বিক্রয় করলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

রিয়েল এস্টেট এর সেবাসমূহ লংঘনের জন্য ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ডে, অনাদায়ে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে। পূর্ব নােটিশ ছাড়া কোন ডেভেলপার ক্রেতার রিয়েল এস্টেটের বরাদ্দ বাতিল করলে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।। #বিধান লংঘন করিয়া কোন ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট বন্ধক রাখলে ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনুর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।

কোন ডেভেলপার চুক্তিতে প্রতিশ্রুত রিয়েল এস্টেট ক্রেতার নিকট বিক্রয় না করে, ক্রেতার অজ্ঞাতে, অবৈধভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে, অন্যত্র বিক্রয় করলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। #কোন ডেভেলপার ক্রেতার সহিত সম্পাদিত চুক্তির অধীন প্রতিশ্রুত নির্মাণ উপকরণের পরিবর্তে, অবৈধভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করলে বা যথাযথ পরিমাণ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।

কোন ডেভেলপার অনুমােদিত নকশা বহির্ভূতভাবে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। #যদি কোন ডেভেলপার কোন ভূমির মালিকের সাথে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন করে বা ক্রেতা বরাবর রিয়েল এস্টেটের বরাদ্দপত্র সম্পাদন করে সে অনুযায়ী কোন কার্যক্রম গ্রহণ না করে বা আংশিক কার্যক্রম গ্রহণ করে বিনা কারণে অবশিষ্ট কাজ অসম্পাদিত অবস্থায় ফেলে রাখে এবং তার জন্য ভূমির মালিককে বা ক্ষেত্রমত ক্রেতাকে কোনরূপ আর্থিক সুবিধা প্রদান না করে তাহলে তা এই আইনের অধীন একটি প্রতারণামূলক অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং ঐ অপরাধের জন্য ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।

কোন ডেভেলপারের সাথে কোন ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হবার পর চুক্তিতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভূমির দখল ডেভেলপারের অনুকূলে হস্তান্তর না করলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। কোন ডেভেলপারের সাথে কোন ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হবার পর চুক্তির শর্ত মােতাবেক ডেভেলপারের অনুকূলে সম্পাদিত রেজিষ্ট্রার্ড আম-মােক্তারনামা অন্যূন ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে নােটিশ না দিয়ে বাতিল করলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। কোন ভুমির মালিকের সাথে কোন ডেভেলপার কোন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হবার পর চুক্তির শর্ত মােতাবেক

রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন যথাযথভাবে সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিকের অংশ ভূমির মালিকের অনুকূলে হস্তান্তর না করিলে কিংবা ক্ষেত্রমত, দখল বুঝিয়ে না দিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। এই আইনের অধীন দন্ডনীয় অপরাধসমূহ আপােষযােগ্য, জামিনযােগ্য এবং অআমলযােগ্য।

সূত্র : অনলাইন

Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *